রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
বরিশালে অনুষ্ঠিত হলো উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী শ্মশান দীপালি উৎসব। কাউনিয়ায় অবস্থিত বরিশাল মহাশ্মশানে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকেই জ¦লে ওঠে হাজারো বাতি। এর আগে থেকেই মহাশ্মশান এলাকা ভরে যায় মানুষের ভিড়ে। এ অনুষ্ঠানে মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি ও প্রদীপ জ¦ালিয়ে প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসময় মৃত স্বজনদের পছন্দের খাবার সাজিয়ে রাখা হয়। একই সঙ্গে কীর্তন, গীতাপাঠসহ ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন তারা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশি দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ আসেন এই উৎসবে যোগ দিতে। এর মধ্যে কারো আত্মীয় স্বজনের সমাধি রয়েছে এই শ্মশানে।
আবার অনেকে এসছেন উপমহাদেশের এতবড় এই উৎসব দেখতে। শ্মশান দীপালিতে আসা দর্শণার্থীরা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও নির্বিঘ্ন ভাবে এই উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। এখানে হিন্দু-মুসলিম সবাই আসতে পারে। এটা অসাম্প্রদায়িকতার সবচেয়ে বড় একটি উদাহরণ। আয়োজকরা জানান, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই যুগ যুগ ধরে বরিশালের এই ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন তারা। এদিকে গোটা অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আনসার ও র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। চারদিকে বসানো সিসি ক্যামেরা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। রয়েছে একাধিক নিরাপত্তা বুথ। এর আগে থেকেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছে অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটির স্বেচ্ছাসেবক দল। ২০৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই মহাশ্মশানে কাঁচা পাকা মিলিয়ে ৭০ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশবিরোধী নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ ও মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এই মহাশ্মশানে।